নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘মাইন্ডব্রিজ এন্ড নলেজ কম্পিটিশন ২০২৫’ কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি জান্নাতুন নাইম প্রমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেন, নোবিপ্রবি প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, জুলাই বিপ্লবে শহিদ নাসিমা আক্তারের বোন কোহিনুর আক্তার এবং জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নাফিসা সামিয়া মাইশা।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, জুলাই শুধু একটি বিপ্লব নয়, এটি একটি জাতির পরিবর্তন। জুলাই বিপ্লবে বিপুলসংখ্যক নারী অংশগ্রহণ করেছেন, অনেকে শহিদ হয়েছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় সুন্দর একটি সমাজ বিনির্মাণে নারীরা কখনোই পিছিয়ে ছিল না। জুলাই বিপ্লবে যেসব নারী শহিদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। জুলাই আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বিপ্লবের সেই চেতনাকে আমাদের বুকে ধারণ করতে হবে। এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী একটি আয়োজনের জন্য জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় এ ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল সবচেয়ে বেশি। জুলাই বিপ্লবে তারাও প্রতিটি বুলেট মাথা পেতে নিয়েছে। আত্মত্যাগকারী সেইসব নারীদের স্মৃতি আমরা যেনো বুকে ধারণ করি। বিপ্লবের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ দেশ সবার। এখানে কোনো বিভেদ থাকবেনা। প্রতিটি মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচবে। বর্তমান সময়ে নারীরাও সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল থেকে নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসছে। জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ এ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, আমাদেরকে জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শুধু ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে হবে। নোবিপ্রবিতেও এ পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। বর্তমানে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নিয়েছে নোবিপ্রবি। আগামীতে আমাদের একটি গর্বের প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি গড়ে উঠবে এ প্রত্যাশা করি।
কুইজ প্রতিযোগিতায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের মোট ২০ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, সাংবাদিক এবং ফাউন্ডেশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে আগত অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
অন্যদিকে, শুক্রবার বিকেলে নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির ১ যুগে পদার্পণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য র্যালি, কেক কাটা, সংগঠনের বার্ষিক প্রকাশনা ‘ফাউন্টেনপেন’ এর মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইকিউএসি সেমিনার রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক ও নোবিপ্রবি প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান। পরে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রেক্ষাপট ও পরবর্তী বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।