বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সম্প্রতি আর্থিক অনিয়মের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, ইউজিসির এক সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেনকে তথ্য গোপন করে অতিরিক্ত ১৬ লাখ টাকা পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনা ইউজিসির চূড়ান্ত প্রশাসনিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
২০২২-২০২৪ অর্থবছরের অডিটে দেখা গেছে, ইউজিসির বিভিন্ন কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়মবহির্ভূতভাবে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তার আপগ্রেডেশন, যেগুলো প্রথাগত নিয়মাবলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তাদের অতিরিক্ত বেতন ও সুবিধা পাওয়া যায়। অডিট রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে যে, এই অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়া উচিত।
মো. আনোয়ার হোসেন ১৯৯০ সালে ইউজিসিতে যোগদান করেন এবং চাকরিজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনবার পদোন্নতি পান। সিনিয়র সহকারী সচিব পদে অবস্থানকালে তার পেনশন ফাইল পর্যালোচনা করা হয় এবং দেখা যায়, তাকে অনিয়মভাবে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ইউজিসির অডিট শাখার পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলেছেন, “এই তথ্য সংরক্ষিত এবং আমি গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করার অনুমোদিত ব্যক্তি নই।” তবে প্রশাসন বিভাগের একজন কর্মকর্তা, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ইউজিসিতে ৬০ জনেরও বেশি কর্মকর্তার পদোন্নতি নিয়মবহির্ভূতভাবে হয়েছে এবং তারা অতিরিক্ত বেতন নিচ্ছেন।
এই ঘটনায় ইউজিসির স্বচ্ছতা ও অভ্যন্তরীণ নিয়ম সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠেছে, যাতে অনিয়ম বন্ধ করা যায় এবং সরকারি তহবিল সুরক্ষিত থাকে।
উল্লেখ্য, ইউজিসি নিয়মবিধি অনুযায়ী পদোন্নতি ও বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম রয়েছে, যা অমান্য করা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এই অনিয়মের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত অর্থ প্রদান স্থগিত করা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।