রাকসু নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা

রাবি প্রতিনিধি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি, ‘পোষ্য কোটা’ ইস্যু ঘিরে উত্তেজনায় ক্যাম্পাসের চিত্র। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি, ‘পোষ্য কোটা’ ইস্যু ঘিরে উত্তেজনায় ক্যাম্পাসের চিত্র। ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ— রাকসু নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে নানা আলোচনা, বিতর্ক ও অনিশ্চয়তা। প্রায় তিন দশক পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, কিন্তু বারবার তফসিল পরিবর্তন এবং ‘পোষ্য কোটা’ ইস্যু ঘিরে উত্তেজনা পুরো প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছে।

নির্বাচনের তফসিল ইতিমধ্যে ছয়বার পরিবর্তন করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর ভোটের তারিখ নির্ধারণ হলেও প্রশাসনিক ও শিক্ষার্থী পর্যায়ের আন্দোলন পরিস্থিতিকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। ‘পোষ্য কোটা’— অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য নির্দিষ্ট আসন সুবিধা— বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছে। অন্যদিকে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন করেছেন।

সম্প্রতি এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে, এমনকি শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর কিছু শিক্ষক ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন। ফলে ক্যাম্পাসের একাংশে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের দাবি, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। তারা জানায়, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেই রাকসু নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। তবে আন্দোলন ও প্রতিবাদ অব্যাহত থাকায় শঙ্কা কাটছে না।

বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ সময় পর রাকসু নির্বাচন পুনরুজ্জীবিত হলেও ‘পোষ্য কোটা’ ও শিক্ষক লাঞ্ছনা ইস্যু এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্কের টানাপোড়েন নিরসন না হলে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে মনে করছেন, রাকসু নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয় নয়— এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পুনর্গঠনের একটি বড় সুযোগ। তাই সকল পক্ষকে সংযত থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

সম্পর্কিত