পাহাড়ি তরুণী ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবি ও রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাবি থেকে আরিফ উজ জামান কোরবান
 ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট
ছবি: ক্যাম্পাস রিপোর্ট

খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় বাঙালি যুবক কর্তৃক ত্রিপুরা তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাবির প্যারিস রোডে রাবি ও রুয়েটের পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ওই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে রাবি ও রুয়েটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্যারিস রোডে এসে শেষ হয়। 

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা 'নিজ ভূমিতে আদিবাসী নারী অনিরাপদ কেন?', 'পার্বত্য চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন কর', 'জুম্ম নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ কর', 'পর্যটনের নামে বেদখল নয়, ধর্ষণ নয়', ‘রাষ্ট্রীয় হেফাজতে মব ও হত্যা বন্ধ কর’সহ নানা স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। এসময় তারা ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ভুক্তভোগীর মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

রাবি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিসার্স চাকমা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা জেগে উঠলে কেউ দমাতে পারবে না। আমাদের যারা বিদেশি বলে প্রচার করে, তাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই রাষ্ট্র যেন সম্প্রীতির হয়, আমরা তাই চাই। কিন্তু প্রশাসন ধর্ষকদের আড়াল করতে চাইছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে না।”

রাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জেমি সাইলোক তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, “আমরা পাহাড়িরা নাগরিক হিসেবে দেশের অংশ হয়েও সংখ্যালঘু বলেই অনেক সময় গুরুত্ব পাই না। পাহাড় থেকে সমতলে সমানভাবে ধর্ষণ হচ্ছে, কিন্তু প্রতিকার নেই। বিশেষ করে গত বছরের জুলাই থেকে সহিংসতা বাড়ছে। সরকার এক্ষেত্রে অনেকসময়ই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষকের ভুমিকা পালন করছে।”

রুয়েট শিক্ষার্থী বিনয় কুমার চাকমা বলেন, “বাংলাদেশে ধর্ষণের খুব কম বিচারই হয়। আর পার্বত্য চট্টগ্রামে তো বিচারপ্রাপ্তির হার প্রায় শূন্য। সম্প্রতি পাহাড়িদের ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে, কিন্তু প্রতিকার নেই। এমনকি গতকাল খাগড়াছড়িতে প্রতিবাদ মিছিলে সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ করেছে। আমরা আজকের এই মানববন্ধন থেকে ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম বলেন, “বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো ধর্ষণেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে এমন নজির নেই। পার্বত্য অঞ্চলে ধর্ষণ ও জমি দখলের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে, কিন্তু রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। পর্যটনের নামে আদিবাসীদের ভূমি অধিগ্রহণ আদিবাসী অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এর আগে গত বুধবার খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ার লতিবান এলাকায় রথযাত্রা উৎসব দেখতে গিয়ে ছয়জন বাঙালি যুবকের বিরুদ্ধে এক ত্রিপুরা তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।

সম্পর্কিত