রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এবং উত্তরবঙ্গের প্রতি অনন্তকালের বাজেট বৈষম্য নিরসনের দাবিতে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার "মডার্ন মোড় ব্লকেড" দিয়েছে বেরোবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১:৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল মডার্ন মোড়ে এসে অবস্থান করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা "রক্ত লাগলে রক্ত নে, রংপুরে বাজেট দে", "লাশ লাগলে লাশ নে, রংপুরে বাজেট দে", "ঢাবির সিন্ডিকেট ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও", "ইন্টারিমের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান," "আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই" " আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ", ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, রংপুরে বাজেট দে" ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা যায়।এসময় শিক্ষার্থীরা রংপুরের বৈষম্য নিরসনের জন্য দুই দফা দাবি প্রদান করেন,
১.উত্তরবঙ্গের বাজেট বৈষম্য নিরসনে ও উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও অবকাঠামোগত সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে আঞ্চলিক স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করতে হবে।২. বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্নাঙ্গ ও স্বায়ত্তশাসিত হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
শিবলি সাদিক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন,"জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কোন প্রকার বৈষম্য থাকবে না কিন্তু আমরা জুলাই পরবর্তী সময় দেখতেছি সরকার রংপুর এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাজেট বৈষম্য করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস রুম সংকট আবাসন সংকট এবং রংপুরের নানা উন্নয়নে কোন বাজেট দেয়নি এই অন্তবর্তী কালীন সরকার । আমরা চাই এই সকল কাজের জন্য বাজেট প্রণয়ন করা হোক এবং রংপুরে তিস্তা পরিকল্পনা সহ সকল প্রকার বৈষম্য দূর করার জন্য আজকের এই আন্দোলন। "
জাহিদ হাসান জয় বলেন " রংপুর এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরে আমরা বাজেট বৈষম্য দেখতে পেয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম ২৪ এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর এ ধরনের বৈষম্য দূর হবে। কিন্তু এখনো কোনো বাজেট বৈষম্য দূর হয়নি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সহ রংপুরের উন্নয়ন কাজে নূন্যতম কোন বাজেট প্রণয়ন করা হয়নি। তাই আমরা এই বৈষম্য নিরাশনের দাবিতে রাজপথে নেমেছি "
আরেক শিক্ষার্থী বলেন " জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কোন প্রকার বৈষম্য থাকবে না কিন্তু আমরা জুলাই পরবর্তী সময় দেখতেছি সরকার রংপুর এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাজেট বৈষম্য করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অডিটোরিয়াম নেই, ক্লাস রুম সংকট, আবাসন সংকট এবং রংপুরের নানা উন্নয়নে কোন বাজেট দেয়নি এই অন্তবর্তী কালীন সরকার । আমরা চাই এই সকল কাজের জন্য বাজেট প্রণয়ন করা হোক এবং রংপুরে তিস্তা পরিকল্পনা সহ সকল প্রকার বৈষম্য দূর করার জন্য আজকের এই আন্দোলন। "
উল্লেখ্য যে, ব্লকেড কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা দুইটি আলটিমেটাম প্রদান করেন,আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দাবী আদায় না হলে উত্তরবঙ্গ ব্লকেড ও উত্তরবঙ্গ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে উপরোক্ত ২দফা দাবি আদায়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
আগামী কর্মসূচিঃ
উত্তরবঙ্গের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রংপুরের সাধারণ জনতাকে নিয়ে আগামীকাল আবু সাঈদ চত্বরে সমবেত হয়ে জেলা প্রশাসক কমিশনের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।এই উদ্দেশ্য আবু সাঈদ চত্বর থেকে 'মার্চ টু জেলা প্রশাসক' ও 'মার্চ টু বিভাগীয় কমিশনার' কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২৭ জুলাই, ২০২৫ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতরো উন্নয়নের জন্য ২৮৪০ কোটি টাকা বাজেট অনুমোদন করা হয় । কিন্তু বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কোন বাজেট অনুমোদন করা হয়নি। উত্তর বঙ্গের জন্য বাজেট বরাদ্দ শুন্য।