সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নে জাতীয় বেতন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘ এক দশক পর নতুন করে এই কমিশন গঠিত হয়েছে, যা আগামী ছয় মাসের মধ্যেই নতুন জাতীয় পে স্কেলের সুপারিশ জমা দেবে। এ লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাধারণ নাগরিক, বিভিন্ন সংগঠন, অ্যাসোসিয়েশন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মতামত গ্রহণ শুরু হয়েছে। কমিশন আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই মতামত গ্রহণ করবে।
কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন, দীর্ঘ বিরতির পর গঠিত কমিশন এবার মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় ও কর্মচারীদের যৌক্তিক চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে নতুন স্কেল নির্ধারণ করছে। আশা করা হচ্ছে, এই নতুন প্রস্তাবনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক স্বস্তি এনে দেবে।
বর্তমানে ২০টি গ্রেড নিয়ে গঠিত সরকারি পে স্কেল পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাবনা আলোচনায় রয়েছে। নতুন কাঠামোতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত কমিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, ১ম গ্রেডের সর্বোচ্চ বেতন হতে পারে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এবং ২০তম গ্রেডের সর্বনিম্ন বেতন ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। বিসিএস কর্মকর্তাদের প্রাথমিক বেতনও বাড়তে পারে দ্বিগুণ—বর্তমানে যেখানে ২২ হাজার টাকা, তা নতুন স্কেলে হবে ৪৪ হাজার টাকা।
অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৬ সালের শুরুতেই নতুন পে স্কেল কার্যকর করা সম্ভব। সংশোধিত বাজেটে এই স্কেল বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গেজেট প্রকাশের মাধ্যমেই নতুন কাঠামো আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে।
এছাড়া, কমিশন প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করছে, যেন বাংলাদেশের নতুন পে স্কেল আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। নতুন স্কেল বাস্তবায়িত হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান, আর্থিক নিরাপত্তা ও কর্মদক্ষতায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।