গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’-এর প্যানেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা পলিটিক্যাল প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এখানে প্রতিটি বিষয়ে রাজনীতি আবর্তিত। শিক্ষার্থীদের আবাসিক সুবিধা, খাবার ও একাডেমিক এক্সিলেন্সিসহ নানা বিষয়ে পরিবর্তন আনতে গেলে সবার আগে পলিটিক্যাল কাঠামোতে সংস্কার করতে হবে। আমরা নির্বাচিত হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলমান রাজনীতির কালচার চেঞ্জ করব। তাদের রাজনীতির ধরন কেমন হবে, এর একটা ক্রাইটেরিয়া সেট করব। তাহলে অন্য বিষয়গুলোয় সহজে পরিবর্তন আসবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষকরা অবশ্যই রাজনীতি করবেন। তবে তিনি প্রফেশনাল লাইফে কতটুকু রাজনীতি করবেন, এরও একটা ক্রাইটেরিয়া থাকতে হবে। একইভাবে ছাত্ররাজনীতির ক্ষেত্রেও একটা কাঠামো থাকবে। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গ্রহণযোগ্য একটা নীতিমালা তৈরি করা হবে।
ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় একটি সংবাদ মাধ্যম কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে ডাকসু নির্বাচন পরিবেশ, নিজেদের প্রত্যাশা, একাডেমিক নানা সংস্কার, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ নানা দিক তুলে ধরেন আব্দুল কাদের। ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ‘৭৩’-এর অধ্যাদেশে সংস্কার আনব। এতে ভিসি, প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ-হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান নিয়োগসহ নানা বিষয়ে সংস্কারে উদ্যোগ নেব। এতে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে এসব সংস্কার করা হবে। গণরুম-গেস্টরুম ফিরে আসার শঙ্কাসহ শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের জায়গাগুলো ধরে ধরে কাজ করব। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জায়গা সমুন্নত রাখতে চাই।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃত্রিম আবাসন সিট সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের জিম্মি থাকতে হয়। আমরা সেটি সবার আগেই দূর করব। ওয়ান সিট ওয়ান স্টুডেন্টের ব্যবস্থা করা হবে, যেন কারও কাছে জিম্মি থাকতে না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৮ হলের ক্যান্টিন ও ম্যাচের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটা মনিটরিং সেল গঠন করা হবে।
একাডেমিক বিষয়ে আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে পুরোনো কারিকুলামে পড়াশোনা করানো হয়। আমরা যুগোপযোগী আধুনিক সিলেবাস তৈরি করব। এছাড়া রেজিস্ট্রার ভবনের দাপ্তরিক জটিলতা দূর করতে একটি অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তি থেকে শুরু করে সর্বশেষ মাস্টার্সের মার্কশিট তোলা পর্যন্ত সব কার্যক্রম করার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের দায়বদ্ধতার জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটা সেন্টার, ল্যাবে যুগোপযোগী ইকুইপমেন্ট, ইন্টারনেট এক্সেস, গবেষণা খাত বরাদ্দ বাড়ানো ও শিক্ষার্থীদের জন্য আরএ এবং টিএস সিস্টেমে চালু করব। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষার জন্য সবকিছু করা হবে।
নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের নারী শিক্ষার্থী অর্ধেকের মতো হলেও তাদের জন্য হল রয়েছে কেবল পাঁচটি। তাদের লেট পারমিশন নিয়ে জটিলতা দূর করা হবে। তাদের হলে যেসব অমানবিক নিয়ম আছে, সেগুলো দূর করা হবে। তাদের জন্য নিরাপদ ও সম্মানজনক একটা ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা হবে। যৌন নিপীড়ন ব্যাপারে কার্যকর সেল ও অভিযোগের যথাযথ বিচার করা হবে।