সরকার রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন থেকে দেশকে মুক্ত করতে টেকসই সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার (১৪ জুলাই ২০২৫) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের “জুলাই বিপ্লব স্মৃতি” হলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সমিতির রজতজয়ন্তী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এ কথা বলেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। দীর্ঘদিন পর নিজ বিভাগের শিক্ষক ও অ্যালামনাইদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তিনি আপ্লুত হন এবং সমিতিকে চমৎকার আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ শওকত আলী নূরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহমদ ইমরানুল আজিজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করেন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, ইতিহাসবিদ ও গবেষক প্রফেসর ড. শাহ্ মোহাম্মদ শফিকউল্লাহ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুহিবউল্যাহ ছিদ্দিকী, চবি বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সাখাওয়াত হুসাইন, সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক মেজর (অব.) মো. নুরুল হুদা কুতুবী, প্রাক্তন সভাপতি মুহাম্মদ শামসুল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আকন্দ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. সালমা বিনতে শফিক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সেলিম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাউশি-চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মো. ফজলুল কাদের চৌধুরী, সমিতির সহ-সভাপতি প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন খান, জীবন-সদস্য প্রফেসর এ এন এম ইউসুফ চৌধুরী ও অধ্যাপক লিয়াকত আখতার সিদ্দিকী।
উৎসবের শুরুতে বিকেলে ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বর্ণিল র্যালির আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় স্মরণিকা ‘ফিরে দেখা – ২০২৫’-এর মোড়ক উন্মোচন ও রজতজয়ন্তী-কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ ও সমিতির নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রফেসর ড. শাহ্ মোহাম্মদ শফিকউল্লাহ ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনকে সমিতির পক্ষ থেকে সম্মাননা-স্মারক প্রদান করা হয়।
রজতজয়ন্তী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন জীবন-সদস্য প্রফেসর মো. আবু তাহের, প্রফেসর মো. ফেরদাউস কবীর, শিল্প-উদ্যোক্তা অধ্যাপক নাহিদ বানু, দৈনিক কক্সবাজার-এর সম্পাদক ফাতেমা জাহান, যুগ্ম-সম্পাদক আ ন ম নাসির উদ্দীন, অর্থ-সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি-সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফারুক হোসাইনী, সমাজসেবা-সম্পাদক এ কে এম আকতার কামাল চৌধুরী, প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেহেনা আখতার বেগম, প্রচার-ও-প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল বশর রাসেল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আইয়ুব, মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী সদস্য মো. হারুনুর রশিদ মনছুরী, এ টি এম তোহা, এ এম রমিজ আহমদ, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবু ছাইয়িদ, মো. আবু সালেহ ও অহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া সমিতির জীবন-সদস্য, প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথি, বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম অ্যালামনাই হিসেবে রজতজয়ন্তী উৎসব সমিতির জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এই সমিতির সদস্যরা দেশ-বিদেশে দ্যুতি ছড়িয়ে জাতির জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। আগামী দিনে দেশ-জাতি, মানবকল্যাণ ও ছাত্রকল্যাণে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। জাঁকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে বক্তারা বিভাগের ঐতিহ্য আরও ছড়িয়ে দিতে অ্যালামনাইদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
সমিতির রজতজয়ন্তী উৎসবে ইতঃপূর্বে মৃত্যুবরণকারী শিক্ষক, জীবন-সদস্য, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, “চব্বিশের জুলাই বিপ্লব”-সহ স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল শহীদ এবং বিভাগ-বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের স্মরণে শোক-প্রস্তাব গৃহীত হয়। তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা বোরহান উদ্দিন মো. আবুল আহসান।