সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বাড়িভাড়া ভাতা বাড়িয়ে ১,০০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শিক্ষকদের সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তকে ‘অপর্যাপ্ত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি বাস্তবায়নে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশে জানানো হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় থাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা এখন থেকে মাসিক ১,৫০০ টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পাবেন। তবে শিক্ষক সমাজ বলছে, এই সামান্য বৃদ্ধি তাদের প্রকৃত চাহিদা পূরণ করে না।
শিক্ষকরা দাবি করছেন, বাড়িভাড়া ভাতা নির্দিষ্ট অঙ্কে নয়, বরং মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা এবং উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন ও মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, কিন্তু তাদের ন্যায্য দাবি এখনও পূরণ হয়নি। সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে তারা ‘প্রহসনমূলক বৃদ্ধি’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এটি শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ও বাস্তব জীবনের ব্যয়বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য ন্যায্য ভাতা কাঠামো পুনর্বিবেচনা করা হোক। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।”
এরই মধ্যে সংগঠনটি ঘোষণা দিয়েছে, তাদের দাবি বাস্তবায়নে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।
শিক্ষকদের এই ঘোষণায় সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অপ্রতুল বেতন ও ভাতার কারণে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, শিক্ষা খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবিগুলো বিবেচনায় নেয়া জরুরি। অন্যথায় এই অসন্তোষ বড় আন্দোলনে রূপ নিতে পারে, যা শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।